মোঃ আশিকুর রহমান আজমিরীগঞ্জ থেকে :-
তুমি কে? আমি কে? বাঙালি, বাঙালি। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধের পরিক্রমায় ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীন বাঙালি জাতি হিসেবে সমগ্র বাংলায় আন্দদের রেস জমে উঠে প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে।আজ ৮ ডিসেম্বর আজমিরীগঞ্জ মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকহানাদার বাহিনীদের আজমিরীগঞ্জ ছাড়তে বাধ্য করা হয়। এই দিন আজমিরীগঞ্জের বীর সেনারা পাকিস্তানিদের বিভিন্ন দিক দিয়ে ঘেরাও করলে কোন অস্ত্র যুদ্ধ ছাড়াই জয় লাভ করেন আজমিরীগঞ্জের বীর সন্তানরা। আজমিরীগঞ্জে পাক হানাদারদের দুটি ক্যাম্প ছিল। একটি বর্তামান আজমিরীগঞ্জ খাদ্য গোদাম ও থানা নিয়ে অপরটি পশ্চিম দিকে কালিদাস প্রসন্ন বাড়ি মূলত তারা শরনার্থী শিবিরে চলে যাওয়ায় পরিত্যক্ত থাকায় (বর্তমান আজমিরীগঞ্জ সরকারি কলেজ)। এইদিন সকাল ৭টা থেকে চলে আজমিরীগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধাদের গোপন অভিযান। কোন গ্রুপের সদস্যরা জয়সিদ থেকে কাকাইলছেওয়ে আসেন কেউ কেউ ইটনা হয়ে আজমিরীগঞ্জে উঠেন।
৩টি গ্রুপে ভাগ হয়ে পাক-হানাদারদের প্রথমে আজমিরীগঞ্জ বাজার এবং কালিদাস প্রসন্ন বাবুর বাড়িতে ঘাঁটি স্থাপন করা পাক বাহিনীদের আজমিরীগঞ্জ ছাড়তে বাধ্য করা হয় । ৩টি গ্রুপের মাঝে একটি মেঘনা রিভার ফোর্স যার কমান্ডার ছিলেন ফজলুর রহমান চৌধুরী, দাশপার্টি গ্রুপ যার কমান্ডার ছিলেন সফিকুল রহমান। তৈয়বুর রহমান, আর একটি ছিল কবির আহমেদের গ্রুপ। ৩০-৪০ করে একেকটি গ্রুপ ভাগ হয়ে কাজ করেছেন। প্রায় ১শত পঞ্চাশ জন মুক্তিযুদ্ধা এদিন সরাসরি অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাছাড়া অনেক মুক্তিযোদ্ধা আজমিরীগঞ্জের বাহিরেও ৩নং সেক্টরের অধীনে বিভিন্ন জায়গায় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে যুদ্ধ করেছিলেন।
বীরমুক্তি যুদ্ধা রাশিদুল হাসান চৌধুরী কাজল বলেন, প্রথমে বিকেলে আজমিরীগঞ্জে বাজার ও কলেজ মুক্ত করা হয়। পরে সন্ধ্যার দিকে কাকাইলছেওয়ের শাহানগর এলাকায় পাক বাহিনীদের রশদ ও খাদ্যে ব্যবহৃত স্টীল বোট আটক করা হয়। পরে সেটি কাকাইলছেও বাজার ঘাটে আনা হয় এবং স্টিল বোটে থাকা খাদ্য ধ্বংস না করে যেভাবে ছিল সেভাবেই রাখা হয়। পরের দিন গানবোট পালিয়ে যাচ্ছে মনে করে যা বাঁধা ছিল কাকাইলছেও ঘাটে সকাল ৭টার দিকে ইন্ডিয়ান ফিট্ টুয়েন্টি ওয়ান নামে ৪টি বিমান এসে ৭টি গুলি করে খাদ্যভর্তি বোটে আগুন ধরিয়ে দিলে পরবর্তীতে আমরা বোটটি ডুবিয়ে দেই।
পরবর্তীতে স্বাধীন আজমিরীগঞ্জের মুক্তিযুদ্ধাদের অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করা হয় আজমিরীগঞ্জ উপজেলা পরিষদ মাঠ সংলগ্ন এলাকায়।